ট্যাক্সিচালক থেকে পাকিস্তানের ক্রিকেট তারকা

শেয়ার করুন:

জীবন মানেই সংগ্রাম আর এই কঠিন পথচলায় যিনি লেগে থাকতে পারেন, সকল চড়াই-উতরাইকে পাশ কাটিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন তিনিই দিন শেষে সফল। এরকম সংগ্রামী জীবনের উদাহরণ আছে বহু। খেলার জগতে এমন বড় বড় দৃষ্টান্তের তো অভাব নাই। এক সময় যাদের নুন আনতে পানতা ফুরাতো, সময়ের বিবর্তনে, নিজের পরিশ্রম আর অধ্যাবসায়ের মাধ্যমে সেই ব্যক্তিরাই এখন বিশ্বে রোল মডেল, আইডল বা অনুকরণীয়। তেমনি একজন এসেছে পাকিস্তানের ক্রিকেট দলে।

পাকিস্তান জাতীয় দলের নতুন মুখ, তরুণ পেস বোলিং অলরাউন্ডার আমের জামাল। তার জীবন সংগ্রাম বলছে অনেক কথা। সেসব গল্প রূপকথাকেও হার মানাবে, মুগ্ধ হবেন যে কেউ। বেশ কিছুদিন ধরেই পাকিস্তানে আলোচনা হচ্ছে আমের জামালকে নিয়ে। ক্রিকেট খেলা যার নেশা, তাকেই পরিবারের অভাব অনটনে ধরতে হয় সংসারের হাল। হাতে নেন ট্যাক্সির স্টিয়ারিং। যে হাতে থাকার কথা- বল আর ব্যাট, সেই হাতেই খুব যত্নে যাত্রীদের পৌঁছানোর দায়িত্ব ভালোভাবেই পালন করেন জামাল।

ভোর ৫টা থেকে সকাল সাড়ে দশটা, ট্যাক্সি চালানোর প্রথম শিফট। তারপর বোলিং প্রাক্টিস। আবারো স্টিয়ারিং হাতে বের হতে হবে দ্বিতীয় শিফটে। মাঝখানে যে সময়টা থাকতো, সে সময় ব্যাটিং আর ফিল্ডিং প্রাক্টিস। আর খাওয়া, তাতো দুপুরে একবার, নাকে-মুখে কোন রকমে। এমন জীবনই জামালকে শিখিয়েছে জীবনের মাহাত্ম্য।

যে পরিশ্রম করবে, তার ভালো ফল বিধাতা কর্তৃক ঘোষিত। আমের জামালতো তার পরিশ্রমের ফলই পেয়েছেন। হয়তো একটু দেরিই হয়েছে, তবে তাতে কী, কথায় আছে, পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি।

পার্থ টেস্টে পাকিস্তান দলে ইনজুরির থাবার কারণে দলে সুযোগ পান আমের জামাল। আর সেখানেই নিজেকে প্রমাণ করেন তিনি। প্রথম ইনিংসেই নেন ইতিহাস গড়া ৬ উইকেট, ব্যাট হাতেও দেখিয়েছিলেন চমক। সাতাশ বছরে অভিষিক্ত জামাল জানান দেন, দেরি হলেও কিছু একটা করতে এসেছেন, হয়তো নিজের এই সংগ্রামের গল্পকে এক সময় দৃষ্টান্ত হিসেবে নেবে পুরো ক্রিকেট জগৎ।

Leave a Comment

Leave a Comment

এ সংক্রান্ত আরও